রাহবার২৪

৩ বছর ধরেই তারা লকডাউনে?

রাহবার২৪

‘লকডাউন’ শব্দটির সঙ্গে বিশ্ব নতুন পরিচিত হলেও এ বাস্তবতার সঙ্গে অনেক আগেই মানিয়ে নিয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে চার দেয়ালে বন্দী গাজার মানুষ ।

জবর দখলের মধ্যদিয়ে মূলত ফিলিস্তিনকে দুইভাগে ভাগ করে রেখেছে ইহুদিবাদি ইসরায়েল। এর মধ্যে পশ্চিম তীরে সামান্য সুবিধা থাকলেও একঘরে করে রাখা গাজায় নেই নূন্যতম নাগরিক সুবিধা। মাত্র ৩৬৫ বর্গ কিলোমিটারে এই ভূমিতে ২০ লাখের ওপর মানুষের বসবাস। যাদের জীবন-জীবিকা বলতে কিছু নেই, ৮০ শতাংশ মানুষ নির্ভর করে সাহায্যের ওপর। ইসরায়েলের বহুমুখী অবরোধে একটি সুঁইও গাজায় ঢুকতে পারে না। এখানকার কয়েক লাখ মানুষই বাস করে শরনার্থী শিবিরে, বাকীরা নিজের বাড়িতে থাকলেও রাত কাটাতে হয় বোমার আতংকে।

ফিলিস্তিনে এ পর্যন্ত ৩৫৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছে ২ জন। এর মধ্যে গাজায় আক্রান্ত আছেন ১২ জন। এখনও পর্যন্ত কোন মৃত্যু নেই। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য গাজার সম্বল মাত্র ৬৩ টি ভেন্টিলেটর এবং ৭৮ টি আইসিইউ শয্যা। গাজার যে কয়জন চিকিৎসক আছেন তারা উদ্বিগ্ন। কারণ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এ ভূখন্ডে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা কঠিন। স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা নেই বললেই চলে। ফিলিস্তিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ডা. জেরাল্ড রোকেনসেয়াব বলেন, ‘গাজায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারেই দূর্বল, তেমন সুযোগ-সুবিধা নেই। তাই এ মুহুর্তে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এ দিকে গাজায় ইউএসএআইডির পক্ষ থেকে সহায়তা দেয়ার কথা থাকলেও সেটি আটকে দেয়া হয়েছে হামাস সুবিধা পাবে এমন কারণ দেখিয়ে। তাই গাজার মানুষ করোনা থেকে বেচেঁ থাকতে নিজেরাই নিজেদের সুরক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে। মাস্ক তৈরি করছেন কেউ পাতা দিয়ে, কেউ বোতল দিয়ে, অথবা টিন ও কাপড়ের টুকরো দিয়ে । যা দৃষ্টি কেড়েছে বিশ্ববাসীরও।

ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত গাজা ইসরায়েল ও মিশর দ্বারা বেষ্টিত। সশস্ত্র বাহিনী হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের পর থেকেই ভূখন্ডটির উপর অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল। বন্ধ করে দেয়া হয় মিশর সীমান্তও। গাজার স্থল সীমান্তের পাশাপাশি আকাশ ও সমুদ্র পথ সবই বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে মানুষের যাতায়াত ও আমদানী-রপ্তানি পুরোটাই কার্যত্ অচল। ভয়াবহ দারিদ্র ও বেকারত্বের পাশাপাশি মাঝে মোঝেই ইসরায়েলি হামলায় পুরো গাজা একটি মৃত্যু উপত্যকা।

পানি ও বিদ্যুত ছাড়াই দিনের পর দিন তাদের কাটাতে হয়। অচল এ অঞ্চলটিকে সচল রাখতে মাটির নীচ নিচ দিয়ে সুড়ঙ্গ করে মাঝে মাঝে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মিশর থেকে আনা নেয়া করে হামাস। কিন্তু ইসরায়েলি মিসাইল মাঝে মাঝে সেই সুড়ঙ্গগুলোও ধ্বংস করে দেয়। ফলে করোনার এ দুঃস্বময়ে আল্লাহর উপর ভরসা করা ছাড়া তাদের আর কোন উপায় নেই।

সূত্র: আলজাজিরা, এএফপি/কালেরকন্ঠের সৌজন্যে

Follow us

get in touch. stay updated.

জনপ্রিয়