সামীউর রহমান শামীম
চৌধুরী মুহাম্মাদ হুসাইন পেশায় একজন খামারি। গ্রামের একমাত্র মুসলিম পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রামটিতে শুধু তাঁর পরিবারটিই মুসলিম।
জম্মু কাশ্মীরের ডোডা জেলার ভাদেরবাহ শহরতলি থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে হাংগা পঞ্চায়েতের ভালেন-খারোঠি গ্রামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ৫৪ বছর বয়সী এই গুজর (একটি জাতিগোষ্ঠীর নাম) এবং গ্রামবাসী।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রামের সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভোট পেয়ে বিনা বাধায় জয়লাভ করেছেন তিনি। গ্রামে মুসলিম ভোটারের সংখ্যা ৩, তাও আবার তা মুহাম্মাদ হুসাইনের পরিবারের। অপরদিকে হিন্দু ভোটার সংখ্যা ২৬০।
দক্ষিণ ভারতের তেলাঙ্গানা রাজ্যের রাজধানী হায়দরাবাদ ভিত্তিক সংবাদপত্র দ্য সিয়াসত ডেইলির সূত্রে জানা যায়, গ্রামের মোট জনসংখ্যা সাড়ে চারশো। পাঁচ পুত্রসহ সস্ত্রীক বসবাসকারী মুহাম্মাদ হুসাইনের পরিবারই গ্রামটির একমাত্র মুসলিম পরিবার। এক সন্তানের বিয়ে দিয়েছেন হুসাইন। পুত্রবধূও থাকছেন তাঁদের সাথে। অপরদিকে চার কন্যাকে পাত্রস্থও করেছেন তিনি।
নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘আমি মূলত ১৫ বছর যাবৎ এখানে বসবাস করছি। আমার পৈতৃক ভিটা জোরা-পুনথালে (জায়গার নাম)। বছর পনেরো আগে এখানে জায়গা কিনে বসবাস শুরু করি। আমার পরিবারটিই কেবল মুসলিম পরিবার এই গ্রামে। নির্বাচনের ঘোষণা আসলে গ্রামবাসী আমাকে বললো, গ্রাম থেকে প্রার্থী হতে। তাদের ২৬০টি ভোট (গ্রামবাসীরা), আমার মোটে ৩ (পরিবারের সদস্যরা)। আমি বিনা বাধায় জয়লাভ করেছি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার চার কন্যা ও পাঁচ পুত্র। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি। এক ছেলেও বিবাহিত। মেয়েদের বিয়ের সময় সকল আয়োজনে গ্রামবাসী সর্বাত্মক সহায়তা করেছে।’’
ভারতের ব্রডশিট সংবাদপত্র ডেইলি নিউজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস (ডিএনএ), সিয়াসত ডেইলিসহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যম খবরটি গুরুত্বের সাথে প্রচার করেছে।