রাহবার২৪

মুফতি জসিমকে হত্যা চেষ্টা, ‘শাহিন হুজুরের’ গ্রেফতার দাবি

রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান।

রাহবার নিউজ ডেস্ক: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মুফতি জসিম উদ্দিনকে ছুরিকাঘাতকারী সন্ত্রাসী মাসুম আহমেদ ইমরানের জবানবন্দি অনুযায়ী হামলার নির্দেশদাতা ‘শাহিন হুজুরের’ গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে হেফোজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর।

রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরী সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক। সংবাদ সম্মেলনে হামলায় আহত মুফতি জমিস উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবী, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা শফিকউদ্দীন, কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা মুসা বিন ইজহার, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ফয়সাল আহমদ, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জাবের কাসেমী, ঢাকা মহানগর নেতা মাওলানা সাইফুল্লাহ হাবিবী, মাওলানা আ ফ ম আকরাম হোসাইন, মাওলানা নাসির উদ্দিন, মাওলানা আবুল কাসেম ও মাওলানা সানাউল্লাহ খানসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থেকে বাসায় ফেরার পথে আততায়ীর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মুফতি জসিম উদ্দিন। তিনি লালবাগ জামেয়া কোরানিয়া আরাবিয়া মাদরাসার শূরা সদস্য ও সিনিয়র মুহাদ্দিস। কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে তাকে করে ছুরিকাহত করা হয়েছিল।

হামলার একদিন পর মুফতি জসিম উদ্দিন লালবাগ থানায় বাদী হয়ে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। পরে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামলার সিসিটিভি ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ায় হামলাকারী সনাক্ত হয় ও তার ছবি ভাইরাল হয়। স্থানীয়রা জানায়, হামলাকারীর নাম মাসুম আহমেদ ইমরান। সে টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করে থাকে। হামলার ঘটনার চারদিন পর দক্ষিণখান থেকে মাসুমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে মাসুমের গ্রেফতারের খবর প্রকাশিত হয়েছে।

গ্রেফতারের পর পুলিশকে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে মাসুম জানায়, বড়কাটারা মাদরাসার ‘শাহিন হুজুর’ নামের এক ব্যক্তি তাকে এ কাজের জন্য টাকা দিয়েছে। পরবর্তীতে ১৪ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানা থেকে কোর্টে পাঠানো ফরওয়ার্ডিংয়ে হুকুমদাতা হিসেবে ‘শাহিন হুজুর’-এর নাম উল্লেখ করে পুলিশ।

হেফাজত নেতা মুফতি জসিমের ওপর হামলার ধরণ ও হামলাকারীর স্বীকারোক্তি থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, ছুরিটি নিচের দিকে কিডনি ও ওপরের দিকে হার্টের একদম কাছ ঘেঁষে গিয়েছে। শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় একটুর জন্য ছুরির আঁচড় পড়েনি। আল্লাহতায়ালার অশেষ রহমতে বেঁচে যান তিনি।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্বরোচিত এ হামলার বিশ দিন পেরিয়ে গেলেও গ্রেফতার হয়নি মূলহোতারা। গ্রেফতারকৃত মাসুম পুলিশের কাছে তার নির্দেশদাতা ‘শাহিন হুজুর’-এর নাম স্বীকার করেছে। এভাবে দিনের পর দিন হত্যাচেষ্টার মূলহোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মাওলানা জসিম।

সংবাদ সম্মেলনে আংশকা প্রকাশ করে বলা হয়, এ ঘটনার মূলহোতারা গ্রেফতার না হলে, শুধু মুফতি জসিম নয়; আরও সিনিয়র কোনো আলেমকে হত্যাচেষ্টা করা হতে পারে। তাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে ‘শাহিন হুজুরের’ পরিচয়ও প্রকাশ করেছেন হেফাজত নেতৃবৃন্দ। তার স্থায়ী ঠিকানা লালমনিরহাট। তিনি পরিবার নিয়ে লালবাগে ভাড়া থাকেন। আশরাফুল উলুম বড়কাটারা মাদরাসার কিতাব বিভাগে শিক্ষকতা করেন। বড়কাটারা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সাইফুল ইসলামকে শাহিনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, মাদরাসায় চাকরির সময় শাহিন তার নাম পরিবর্তন করে মুশাহিদ রাখে। মাওলানা সাইফুল হেফাজত নেতাদের জানিয়েছেন, মুফতি জসিমের ওপর হামলার দুইদিন পর অর্থাৎ ১১ ফেব্রুয়ারি শাহিন তার বাবা অসুস্থতার কথা বলে মাসরাসা থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি যায়, এরপর সে আর মাদরাসায় ফেরেনি।

শাহিনের সঙ্গে মুফতি জসিমের ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে হেফাজত নেতারা বলেন, হত্যাচেষ্টার মতো কোনো ক্ষোভ বা শত্রুতা তো দূরের কথা, সামান্য কোনো বৈরী সম্পর্কও তাদের পরস্পরে ছিলো না। তাই এ কথা আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, শাহিন কারও নির্দেশেই মাওলানা জসিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে ভাড়াটে খুনির সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করেছিল। মূলত শাহিনকে ভাড়াটে খুনি নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল অন্য কেউ। শাহিনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেই সেই মূলহোতাদের নাম বেরিয়ে আসবে।

শাহিনের পরিচয় প্রকাশের পরও তাকে গ্রেফতার না করে কালক্ষেপণ করার বিষয়টি খুবই রহস্যজনক উল্লেখ করে হেফাজত নেতারা বলেন, আমরা আশংকা করছি, কোনো কুচক্রী মহলের ইশারায় তাকে গ্রেফতার না করে মূলহোতাদের বাঁচানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হলে, হেফাজত মুফতি জসিমের হত্যাচেষ্টাকারী ও নির্দেশদাতাদের বিচারের দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে বলেও জানানো হয়। সুত্রঃ বার্তা২৪

ইয়াহিয়া কাজল (তুহিন)

Add comment

Topics

Recent posts

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.

Most popular

Most discussed