রাহবার২৪

প্রজ্ঞাপন জারি || ৩১ মে থেকে নির্দেশনা মেনে অফিস খুলবে ৥ নিয়ম মেনে গণপরিবহন চলবে ৥ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না

সাধারণ ছুটি না বাড়িয়ে আগামী ৩১ মে রবিবার থেকে সকল অফিস খোলার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেই সাথে ১৫ জুন পর্যন্ত নানান নির্দেশনা মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বয়স্ক ও অন্তঃসত্ত্বা নারী ছাড়া ১৫ জুন পর্যন্ত সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস করতে হবে। অতঃপর ১৬ জুন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কোন নির্দেশনা থাকলে তা পরে জানানো হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আজ ২৪ মে বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উক্ত নিষেধাজ্ঞাকালে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না। এ সময় কর্মস্থলের এলাকায় অবস্থান করতে হবে। দেশের বাড়ী বা অন্যত্র যেতে পারবে না।

নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি : ৩১ মে থেকে অফিস খুলবে ৥ বাস, ট্রেন, লঞ্চ এবং বিমান চলবে ৥ ১৫ জুন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বৃদ্ধি

 

রাহবার ডেস্ক : সাধারণ ছুটি না বাড়িয়ে আগামী ৩১ মে রবিবার থেকে সকল অফিস খোলার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেই সাথে ১৫ জুন পর্যন্ত নানান নির্দেশনা মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বয়স্ক ও অন্তঃসত্ত্বা নারী ছাড়া ১৫ জুন পর্যন্ত সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস করতে হবে। অতঃপর ১৬ জুন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কোন নির্দেশনা থাকলে তা পরে জানানো হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আজ ২৪ মে বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উক্ত নিষেধাজ্ঞাকালে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না। এ সময় কর্মস্থলের এলাকায় অবস্থান করতে হবে। দেশের বাড়ী বা অন্যত্র যেতে পারবে না।

প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, উক্ত সময়ে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত বিধি নিশ্চিত করে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচল করতে পারবে। তবে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। বিমান চলাচলেও বিধিনিষেধ তুলে দেয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিমান কর্তৃপক্ষ নিজ ব্যবস্থাপনায় বিমান চলাচলের বিষয় বিবেচনা করবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের আওতাধীন সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

২৭ মে বুধবার প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, ছুটি না বাড়িয়ে সীমিত আকারে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত এবং শিল্প-কলকারখানা খুলে দিলেও গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। পরে সরকার নতুনভাবে সিদ্ধান্ত জানায় যে, ৩১ মে থেকে সীমিত আকারে সীমিত যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও ট্রেনও চলবে।

উল্লেখ্য, দেশে প্রথম ৮ মার্চ করোনা রোগী পাওয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ওইদিন থেকেই গণপরিবহন এবং দোকানপাট ও কলকারখানা বন্ধ রাখা হয়। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় ১৭ মার্চ। এভাবে করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। ইতিমধ্যে সাত দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়। এবার সেই ছুটি আর না বাড়িয়ে অফিস-আদালত খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা এখনো চরম পর্যায়ে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ২০২৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৮,৩২১ জনে। এছাড়া একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৫৯ জনে। তবে অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা বিবেচনা করে অচলাবস্থা কাটাতে অফিস-আদালত খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

২৭ মে বুধবার বিকেলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৩০ মে ছুটি শেষ হচ্ছে। এরপর নাগরিক জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনৈতিক কমকান্ড এবং অফিস-আদালত সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হবে। সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ ব্যবস্থায় সীমিত আকারে খুলতে পারবে। সে ক্ষেত্রে বয়স্ক, অসুস্থ ও গর্ভবতী কর্মীরা কর্মস্থলে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ১৩ দফা মানতে হবে।

স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সেই ১৩ দফা নির্দেশনা হলো :

১. প্রয়োজনীয় সংখ্যক জীবাণুমুক্তকরণ টানেল স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।
২. অফিস চালু করার আগে অবশ্যই প্রতিটি কক্ষ/আঙিনা/রাস্তাঘাট জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৩. প্রত্যেক মন্ত্রণালয়/বিভাগে প্রবেশপথে থার্মাল স্ক্যানার/থার্মোমিটার দিয়ে কর্মকর্তা/কর্মচারীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে অফিসে প্রবেশ করাতে হবে।
৪. অফিসের পরিবহনগুলো অবশ্যই শতভাগ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। যানবাহনে বসার সময় পারস্পরিক ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং সবাইকে মাস্ক (সার্জিক্যাল মাস্ক অথবা তিনস্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক, যা নাক ও মুখ ভালোভাবে ঢেকে রাখবে) ব্যবহার করতে হবে।
৫. সার্জিক্যাল মাস্ক শুধু একবার (ওয়ান টাইম) হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কাপড়ের মাস্ক সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে।
৬. যাত্রার আগে এবং যাত্রাকালীন পথে বার বার হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
৭. খাওয়ার সময় শারীরিক দূরত্ব (ন্যূনতম তিন ফুট) বজায় রাখতে হবে।
৮. প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পরে সাবান দিয়ে জীবাণুমুক্ত নিশ্চিত করতে হবে।
৯. অফিসগুলোতে কাজ করার সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
১০. কর্মস্থলে সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে থাকতে হবে এবং সাবান পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করতে হবে।
১১. কর্মকর্তা/কর্মচারীদের করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন সাধারণ নির্দেশনাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি নিয়মিত মনে করিয়ে দিতে হবে এবং তারা স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলছেন কি-না, তা মনিটরিং করতে হবে। ডিজিলেন্স টিমের মাধ্যমে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
১২. দৃশ্যমান একাধিক স্থানে ছবিসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্দেশনা ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
১৩. কোনো কর্মচারীকে অসুস্থ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আইসোলেশন/কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দোকানপাট, ব্যবসাকেন্দ্র আগের মতো সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে এ ক্ষেত্রে আরও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আপাতত বন্ধই থাকবে। তবে অনলাইন বা অন্যান্য ভার্চ্যুয়াল ক্লাস অব্যাহত থাকবে।

সরকারী প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত বিধি নিশ্চিত করে গণপরিবহণ, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচল করতে পারে। তবে সব অবস্থায় মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, বিমান কর্তৃপক্ষ ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত নিজ ব্যবস্থাপনায় বিমান চলাচলের বিষয়টি বিবেচনা করবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়লো

বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অফিস-আদালত ও গণপরিবহন চালু হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী ৫ জুন থেকে ছুটি বাড়িয়ে ১৫ জুন করা হয়েছে। গত ২৭ মে বিকালে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কারণেই ছুটি বাড়াতে হবে। শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী ৫ জুন পর্যন্ত ছুটি রয়েছে। এই ছুটির পর আবারও ছুটি বাড়ানো হবে।
ছুটির সময় ঘরে বসেই শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পাঠদানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ শিরোনামে সংসদ টেলিভিশনে ক্লাস চলছে এবং ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও ক্লাস আপলোড করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জন্য। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ঘরে বসে শিখি’ শিরোনামে সংসদ টেলিভিশনে ভিডিও ক্লাস চলছে। এই নামে একটি ওয়েব পোর্টালও ডেভেলপ করা হচ্ছে।

ছুটি দীর্ঘ হতে পারে এমন ভাবনা থেকে মাধ্যমিক ও শিক্ষা অধিদফতর আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে জানিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ছুটি না বাড়িয়ে কোন উপায় দেখা যাচ্ছে না। আর সে কারণে দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে। পাহাড়ি এলাকা, চরাঞ্চল ও হাওরসহ দুর্গম এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি কমিউনিটি রেডিও-এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রমের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি কমিয়ে এবং ক্লাস বাড়িয়ে ক্ষতিপূরণ করার কথা ভাবা হচ্ছে।

ছুটির পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে একটি গাইডলাইন তৈরি করছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হবে। যাতে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়।

.

Follow us

get in touch. stay updated.

জনপ্রিয়